১৯শে মে, ২০২৪ ইং, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম :

পটুয়াখালীতে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে লিলিয়াম-জারভেরা ফুল চাষ

কৃষিকাজ ডেস্ক» পটুয়াখালীতে উৎপাদিত হচ্ছে লিলিয়াম ও জারভেরা ফুল। এ ফুল চাষে বাড়তি জমির প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আঙিনা কিংবা ছাদে সহজেই চাষ করা যায়। রোগ-বালাই কম হওয়া এবং বাজারদর ভালো থাকায় এ ফুল চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়াও সম্ভব।

দুমকি উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক ঘেঁষে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণাকেন্দ্র। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রের ছাদের এক কোণে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে ফুলের আবাদ করা হয়েছে। ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থের বাগানে চার প্রজাতির ফুলের চাষ করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে প্রাথমিকভাবে চারপাশে লোহার পাইপের সেট তার ওপর টিনের ট্রের মাঝে গাছের প্রয়োজনীয় দূরত্ব অনুসারে গর্ত করে উপযুক্ত বয়সের চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রতিটি ফুল গাছে ফুলও ফুটেছে।

পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইফতেখার মাহমুদ বলেন, এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে গ্লাডিওলাস, লিলিয়াম, জারভেরা ও গাদা ফুল চাষ করা হয়েছে। লিলিয়াম ও জারভেরা বিদেশি ফুল। গ্রিন হাউজ ছাড়া এই ফুল চাষ করা সম্ভব না। তবে যশোরে গ্রিন হাউজ তৈরি করে এ ফুল চাষ করা হয়।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, মাটির টব দিয়ে ছাদে বাগান করা কষ্টসাধ্য। এ কারণে শহরের বেশিরভাগ ছাদ ফাঁকা থাকে। টবে ওজনের ফলে ছাদে প্রেসার পড়ে। ছাদ পরিষ্কার রাখা যায় না। আর হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে ছাদে প্রেসার পড়ে না। তা ছাড়া আগাছা পরিষ্কার বা বৃষ্টিতে মাটি ধুয়ে যাওয়ার সম্বাবনা নেই। এটি ক্লিন কাল্টিভেশন।

এর খরচ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রথমে খরচ একটু বেশি হয়। কারণ, লোহার পাইপ, টিনের সেট কিনে অবকাঠামো তৈরি করা। এছাড়া লোহার পাইপ ও প্লাস্টিকের পাইপ কিনে তা ছিদ্র করে চারা রোপণ করতে হয়। এরপর থেকে খরচ কমে যায়। এ বাগানে ১০০ থেকে ১৫০টি গাছ লাগানো সম্ভব। এই বাগানে তাদের নয় হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

শহরের তৃষ্ণা পুস্প বিতানের প্রোপাইটর আহম্মেদ বলেন, লিলিয়াম ও জারভেরা ফুলের বাজার মূল্য ভালো। প্রতিটি গ্লাডিওলাস ফুল ২৮ থেকে ৩৫ টাকা, প্রতিটি লিলিয়াম ফুল ১৩০ টাকা, প্রতিটি জারভেরা ফুল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, প্রতিটি গাদা ফুল ৭০ পয়সা খুচরা বিক্রি হয়।

পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে এর আগে তরমুজ, টমেটো, মরিচ, করলা ও মরিচের আবাদ করে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। তবে ফুলের সাফল্য এই প্রথম। এ পদ্ধতিতে আবাদি জমির প্রয়োজন হয় না, অনাবাদি জমিও চাষের আওতায় আনা যায়। আলাদাভাবে সার ও সেচের প্রয়োজন নেই। মাটিবাহিত কিংবা কৃমিজনিত কোনো রোগ হয় না। তা ছাড়া নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চাষ হয় বিধায় কীটপতঙ্গের আক্রমণ কম। ফলে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না।

Share Button