১৯শে মে, ২০২৪ ইং, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম :

কোদালিছড়া খাল খনন করলে বাঁচবে তিন ইউনিয়নের কৃষক

ডেস্ক রিপোর্ট» মৌলভীবাজার পৌর শহরসহ সদর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম কোদালিছড়া খাল। প্রায় ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই খাল দীর্ঘদিন থেকে খনন না হওয়ায় এবং দখল দুষণে সংকুচিত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয় শহরে। অল্প বৃষ্টিতে নষ্ট হয় তিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষকের ফসলি জমি। তাই কোদালিছড়া খননের দাবি ছিল এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের।

জানা যায়, গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জগন্নাথপুরের খাইঞ্জার হাওরে ফলেনি কৃষকের ধান। পানির তীব্র সংকট আর বর্ষা মৌসুমে মৌলভীবাজার শহরের জলাবদ্ধতার প্রভাবের কারণে এই হাওরে জমে থাকা পানিই কৃষকের ক্ষেত নষ্ট হবার মূল কারণ। প্রতি বছর তলিয়ে যায় কৃষকের ঘামঝরানো কষ্টের ফসল। সময় বদলায়, সরকার বদলায়, জনপ্রতিনিধি পরিবর্তন হয় তবুও পরিবর্তন হয়নি এ অঞ্চলের কৃষকের ভাগ্য। তবে এবার বদলে যাবে এসব ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের হাজারো কৃষকের ভাগ্য।

পানি নিষ্কাশনের একমাত্র এই খালটি দীর্ঘদিন থেকে খনন না হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

মৌলভীবাজার শহরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত কোদালিছড়া খাল। খালটি পৌর শহরের ভেতর দিয়ে, মোস্তফাপুর, গিয়াসনগর ও নাজিরাবাদ ইউনিয়ন হয়ে হাইল হাওরে শেষ হয়েছে। এই খাল দিয়ে উক্ত এলাকার পানি নিষ্কাশন হয়ে হাওরে পরে। কিন্তু পানি নিষ্কাশনের একমাত্র এই খালটি দীর্ঘদিন থেকে খনন না হওয়ায় এবং অবৈধ দখল দুষণে ভরাট হয়ে রয়েছে। যার ফলে অল্প বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি ও ধানি ফসলি জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন এই এলাকার স্থানীয় কৃষকেরা।

শহরের জলাবদ্ধতা কমাতে ও কৃষকের ফসল রক্ষার্থে গত বছর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সিলেট বিভাগ ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কোদালী ছড়া খালের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার পুন:খনন কাজ করা হয়েছে।

এ বছর দ্বিতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সিলেট বিভাগ ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কোদালী ছড়ার খাল পুন:খনন কাজে মোস্তফাপুর, গিয়াসনগর ও নাজিরাবাদ ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার খনন ও দুই পাড়ের বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এই খননের কাজ গত ১৭ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম উদ্বোধন করেন। এর পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এই খাল খননে যুক্ত হবে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

যার ফলে অনেকে আগাম বন্যা থেকে রক্ষা পাবে তিন ইউনিয়নের ফসল এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা। সেই সঙ্গে এই এলাকার ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

এ বিষয়ে পৌর শহরের বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা কামরুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, কোদালিছড়া খনন না হওয়াতে অল্প বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বিপাকে পড়েন শহরের বাসিন্দরা। খালটি খনন এর ফলে শহরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে পারে।

মোস্তফাপুর গ্রামেবাসী জানান, কোদালিছড়া খননের দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের। খালটি ভরাট থাকার কারণে বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশন না হয়ায় ফসলি জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এখন খালটি খনন কাজ শুরু হয়েছে। সঠিকভাবে খালটির খনন কাজ শেষ হলে আশাকরি আর ফসলি জমির ফসল নষ্ট হবে না।

মৌলভীবাজার পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমান জানান, গত বছর কোদালিছড়া খালের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার কাজ হয়েছে। এ বছর আরও চার কিলোমিটারের কাজ শুরু হয়েছে। খালের বাকি অংশের কাজ জেলা প্রশাসন, পৌরসভার, জেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনগণ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সমন্বিত উদ্যোগে খনন করা হবে ।

Share Button