২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম :

সিংড়ায় ভূমিদস্যুদের হামলায় ৬ কৃষক গুলিবিদ্ধ

কৃষিকাজ ডেস্ক» নাটোরের সিংড়ায় ভূমিদস্যুদের হামলায় ছয় কৃষক গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১২জন আহত হয়েছেন। এ সময় ২০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বিকেলে সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল কাউয়াটিকরি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং নাটোর সদর হাসপপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি চলনবিলের সিংড়া উপজেলার সিংড়া-তাড়াশ-বারুহাশ রাস্তার চারমাথা মোড়ে খাল দখল করে ভূমিদস্যু সামাদ মৃধা মার্কেট নির্মাণ করার জন্য মাটি ভরাট করে। কিন্তু অতিবৃষ্টিতে ওই খাল দিয়ে পানি বের না হওয়ার কারণে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এরই প্রতিবাদে ভূমিদস্যু সামাদ মৃধা এবং জাল দলিলের হোতা হারুন কাজীর গ্রেফতার দাবিতে গত ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

এরই জের ধরে শুক্রবার বিকেলে ভূমিদস্যু হারুন কাজী ও তার ভাড়াটে স্বশস্ত্র হজরত বাহিনী কাউয়াটিকরী গ্রামবাসীর ওপর প্রকাশ্যে হামলা চালায়। এ সময় তারা ঘণ্টাব্যাপী প্রকাশ্যে গুলি ছোড়ে। এতে রমিজুল করিম (৩২), আলম হোসেন (৩০), আইয়ুব আলী (৪০), ওহেদ আলী (৪৫), আলমঙ্গীর (২৫), আব্দুর রাজ্জাক (৪৫) নামে ছয় কৃষক গুলিবিদ্ধসহ মোট ১২জন আহত হন।

এছাড়া কাউয়াটিকরি গ্রামের ফরিদ আলী, রফিকুল ইসলাম, ওহেদ আলী, ইউসুফ হোসেন, হামিদ হোসেনসহ অন্তত ২০ জন কৃষকের বাড়িঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে খবর পেয়ে সিংড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কাউয়াটিকরি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ ফরিদ আলী বলেন, জাল দলিলের হোতা হারুন কাজী এবং সামাদ মৃধা দীর্ঘ দিন ধরে জাল দলিল করে মানুষের জায়গা দখল করে আসছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এলাকাবাসী মানববন্ধন করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এই হামলা চালিয়েছে।

একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম ইসলাম নামে এক কৃষক জানান, হঠাৎ করেই হারুন কাজী এবং তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালিয়েছে। এ সময় ২৫টি বাড়িতে তারা ভাঙচুর এবং ১৭টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এমএম আবুল কালাম বলেন, প্রতিপক্ষ জাল দলিলের হোতা হারুন কাজী ও তার ভাড়াটে স্বশস্ত্র হজরত বাহিনী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। অতিদ্রুত সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত বন্দুকটি উদ্ধার হওয়া দরকার। কারণ এই বন্দুক দিয়ে প্রায়ই এলাকায় লুটপাট ও আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।

তবে অভিযুক্ত হারুন কাজী জানান, কাউয়াটিকরি গ্রামের লোকজান উল্টো পারিলা গ্রামে গিয়ে হামলা চালিয়ে তিনটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ, দুটি ভাঙচুর এবং একটি পাওয়ার ট্রিলার ভাঙচুর করেছে। এছাড়াও চারটি শ্যালো মেশিন এবং খড়ের পালা পুড়িয়ে দেয়াসহ বাড়িঘরে লুটপাট চালিয়েছে তারা।

জায়গা-জমি দখলের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, যে খাল নিয়ে কাউয়াটিকরির লোকজন মানববন্ধন করেছে, সে জমি দলিল মূলে পাওয়া। এখানে কোনো জায়গা দখল করা হয়নি।

সিংড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, জাল দলিলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা বা কাউকে আটক করা হয়নি।

Share Button