কৃষিকাজ ডেস্ক>> পাবনায় এ বছর পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সাড়ে ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে প্রায় ৪৯ হাজার হেক্টর জমিতে।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিভুতি ভুষণ সরকার জানান, জেলার ৯টি উপজেলায় এ বছর ৪৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৪৮ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সাঁথিয়া উপজেলায় ১৭ হাজার হেক্টর এবং সুজানগর উপজেলায় ২০ হাজার হেক্টর। এ অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলায়।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকার পেঁয়াজের মাঠ ঘুরে ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাবনার সাঁথিয়া, বেড়া, সুজানগর এলাকায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে মূলকাটা পেঁয়াজেরও বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ মণ মূলকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে মান ভেদে প্রতি মণ পেঁয়াজ ১ হাজার থেকে ১৩০০ টাকায়।
সাঁথিয়ার প্রত্যন্ত বিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠেজুড়ে পেঁয়াজ আর পেঁয়াজ। যতদূর চোখ যায় শুধু পেঁয়াজ আর পেঁয়াজের ক্ষেত। কয়েকদিন আগে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় একে পেঁয়াজের জন্য মধু হিসেবে গণ্য করছে কৃষকরা। এখন দানা মোটা হওয়ার সময় বলে বৃষ্টি খুবই উপকারে আসবে।
সাঁথিয়া উপজেলার ঘুঘুদহ গ্রামের আব্দুল কদ্দুস মেম্বার জানান, পেঁয়াজের বীজ, কীটনাশক, জমি চাষসহ কৃষি শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করতে মৌসুমের শুরুতেই চাষিদের শ্রমে-ঘামে ফলানো পেঁয়াজ লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হয়। অন্যদিকে মোটা দানার পেঁয়াজের আবাদে খরচ যেমন বেশি তেমনি ফলনও বেশি। সঠিক দাম না পেলে এখানেও লোকসান গুনতে হবে কৃষকদের।
একই উপজেলার ক্ষিদির গ্রামের ওয়াজেদ মন্ডল ও সুজানগরের বামনদি গ্রামের রজব আলী জানান, প্রতি বিঘা জমিতে বীজ ক্রয়, জমি চাষ, চারা তৈরি, সার, কীটনাশক, চারা রোপণ, পানি সেচ থেকে পেঁয়াজ তোলা পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরি বাবদ খরচসহ প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন খরচ পড়েছে প্রায় ২৮ হাজার টাকা।
ভবানীপুর গ্রামের আ. রাজ্জাক ও গোপিনাথপুর গ্রামের আ. কাদের মোল্লা জানান, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আমার ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেত গিয়ে এ বছর যে খরচ হয়েছে তাতে ন্যায্য মূল্য না পেলে অনেক লোকসানে পড়ে যাব।
সাঁথিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার প্রামাণিক বলেন, একজন সুপারভাইজারকে কয়েকটি গ্রামের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা জনবল সংকটে আছি। যেখানে থাকার কথা ৪৭ জন সেখানে কর্মরত আছে ৩৩ জন। এ নিয়েই যথাসাধ্য চেষ্টা করে কৃষকদের সেবায় নিয়োজিত আছি।
সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মঈনুল হক সরকার জানান, এ বছর আমাদের তদারকির কমতি নেই। তবে জনবল যা থাকার কথা তা নেই। তবু আমরা কৃষকদের যথাসময়ে পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।