২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ ইং, ১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম :

পেঁপে চাষে স্বাবলম্বী

ডেস্ক রিপোর্ট» কাঁচা বা পাকা পেঁপে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সবজি জাতীয় এ ফলের কদর রয়েছে দেশজুড়ে। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এ ফলের চাহিদাও ব্যাপক। পেঁপে চাষে একদিকে যেমন পুষ্টির চাহিদা মেটে অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হওয়া যায়। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি হাতিমাড়া গ্রামের তমির উদ্দিনের ছেলে বাদল মিয়া পেঁপে চাষ করে খুব অল্প সময়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে অনুকরণীয় পেঁপেচাষিতে পরিণত হয়েছেন।

বাদল মিয়া পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। ইচ্ছে থাকলেও সংসারে অভাবের কারণে তিনি আর এগোতে পারেননি। অল্প বয়সেই কৃষিকাজের মাধ্যমে দরিদ্র বাবার সংসারের হাল ধরেন। লাল মাটির পাহাড়ি এলাকায় তিনি কলা চাষ করে কৃষিজীবন শুরু করলেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন পেঁপে চাষ করে। ১২ একর জমিতে হাইব্রিড জাতের পেঁপে চাষ করে অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন তিনি। স্থানীয় কৃষকদের কাছে বাদল মিয়া এখন রোল মডেল।

পেঁপেচাষি বাদল মিয়া জানান, তিনি গত বছর পেঁপে চাষে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ২৫ লাখ টাকা বিক্রি করেন। ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে এই অর্থ আয় করে তিনি পেঁপে চাষের প্রতি আরও আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পরে ব্যাপক পরিসরে পেঁপে বাগান করার সিদ্ধান্ত নেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে তিনি ৩৬ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পেঁপে বাগান করেন।

তিনি বলেন, আমি স্থানীয় উচ্চ জাত ও রেড লেডি জাতের নিজস্ব উৎপাদন করা পেঁপের চারা দিয়ে বাগান করেছি। তাছাড়া ঘাটাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সব সময় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়েছেন। জমি লিজ, চারা, সার, কীটনাশক, শ্রমিকসহ নানা খরচ বাবদ এ পর্যন্ত আমার ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। কিন্তু পেঁপে পরিপক্ক হওয়ার আগেই পাইকারের কাছে সম্পূর্ণ বাগান বিক্রি করেছি ৫০ লাখ টাকা। আমার এলাকার অনেকেই এখন পেঁপে চাষে আগ্রহী। তাছাড়া পেঁপে চাষে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। মাকড়শা ও ছত্রাক ছাড়া পেঁপে বাগানে আমি তেমন কোনো সমস্যা পাইনি। পেঁপে চাষে সরকারি সহযোগিতা পেলে দেশের অনেক বেকারের কর্মসংস্থান সম্ভব বলে মন্তব্য করেন বাদল মিয়া।

এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন বিশ্বাস বলেন, বাদল মিয়া একজন আদর্শ কৃষক। ঘাটাইল উপজেলায় তিনি একজন বড় পেঁপেচাষি। আমরা বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতি ও পরামর্শ দিয়ে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করছি। তাকে দেখে অনেক কৃষক এখন পেঁপে চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

Share Button