কৃষিকাজ ডেস্ক» দিনাজপুরে ইটভাটার গ্যাসে ‘কালা আগা রোগের’ সংক্রমণে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন আমচাষিরা। এ রোগ থেকে রেহাই পেতে কীটনাশক ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না। ফলে চাষিদের উৎপাদিত ফলের মূল্য তোলা দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। শনিবার (১১ মে) সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের কৃষাণ বাজার এলাকায় এ দৃশ্য দেখা গেছে।
শেখপুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের আম। আর বাগানের সেই আমগুলো পুরোট হতে শুরু করেছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের বাম্পার ফলনের আশা করেছিলেন এখানকার চাষিরা। কিন্তু বাগান মালিক ও আম চাষিদের সে আশা নিরাশায় পরিণত হতে চলেছে।
শহরের গুঞ্জাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মো. নাজির হোসেনের একটি আম ও লিচু বাগান রয়েছে ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের কৃষাণ বাজার এলাকায়। ৮৬ শতাংশ জমিতে ১৬০টি আমগাছ ও শতাধীক লিচু গাছ রয়েছে।
তার বাগানে গিয়ে দেখা যায়, আম গাছে প্রচুর পরিমাণে ফলন হয়েছে। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী বিবিএম ইটভাটায় ইট পোড়ানর পর চার পাশে খুলে দেয়ায় বাতাসের সঙ্গে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। সেই গ্যাস এসে আম বাগানের আমগুলোতে লেগে আম পচে যায়। এতে করে বাগানের পুরো আম নষ্ট হয়ে গেছে। পচা অবস্থায় আমগুলো গাছে ঝুলছে।
এ ব্যাপারে মো. নাজির হোসেন জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগও করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বাগানে আম্রোপালি, হাড়িভাঙ্গা ও বারি-৪ জাতের ১৫০টি আম গাছে ফল ধরেছে। পাশে বিবিএম ইটভাটা ইট পোড়ানোর পর তা ঠান্ডা না হতেই চারদিকে খুলে দেয়ায় বাতাসের সঙ্গে গরম গ্যাস ছড়িয়ে তার আম বাগানের ফল ও আশপাশের কয়েক একর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
‘কৃষকের জানালা’ তথ্য বাতায়নে ক্লিক করে দেখা যায় ইটভাটার বাতাসে কোনো কোনো সময় গ্যাস বিশেষত কার্বন মনোক্সাইডের ঘনত্ব বেড়ে গেলে আমের এ রোগ দেখা যায়। ফলে আমের আগার অংশ কালো হয়ে যায় এবং ভিতরের ভক্ষণযোগ্য অংশ নরম হয়ে নষ্ট হয়ে যায়।
এর প্রতিকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, রোবাক্স অথবা কস্টিক সোডা ছয় গ্রাম/লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর দু’বার স্প্রে করলে এ রোগ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
এ ব্যাপরে জানতে চাইলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফিরুজুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগকারী এবং ভাটার মালিককে ডাকা হবে। এ ব্যাপরে সরেজমিনে গিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।